এইচএসসি পৌরনীতি ও সুশাসন ২য় পত্র এসাইনমেন্ট উত্তর । ২য় সপ্তাহ
এইচএসসি পৌরনীতি ও সুশাসন ২য় পত্র এসাইনমেন্ট উত্তর । ২য় সপ্তাহ পৌরনীতি ও সুশাসন হলো একাদ্বশ-দ্বাদশ শ্রেণীর মানবিক শাখার শিক্ষার্থীদের বাধ্যতামূলক বিষয়। প্রথম সপ্তাহে মানবিক শাখার শিক্ষার্থীদের জন্য পৌরনীতি ও সুশাসন ১ম পত্র এসাইনমেন্ট দেওয়া হয়েছিলো। ২য় সপ্তাহের জন্য এইচ এস সি পৌরনীতি ও সুশাসন এসাইনমেন্ট ২য় পত্র উত্তর ২০২১ ও যতদ্রুত সম্ভবত নিচে দেওয়া হলো ।
পৌরনীতি ও সুশাসন ২য় পত্র এসাইনমেন্ট উত্তর ২০২১ | ২য় সপ্তাহ
সপ্তাহ শুরুর পুর্বে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে অ্যাসাইনমেন্ট বা নির্ধারিত কাজগুলাে আপলােড করা হবে এবং সপ্তাহ শেষে শিক্ষার্থীরা তাদের অ্যাসাইনমেন্ট বা নির্ধারিত কাজ শেষ করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জমা দিয়ে (সরাসরিঅনলাইনে) নতুন অ্যাসাইনমেন্ট গ্রহণ করবে।
এইচএসসি পৌরনীতি ও সুশাসন ২য় পত্র এসাইনমেন্ট উত্তর ২০২১
অ্যাসাইনমেন্ট বা নির্ধারিত কাজের মাধ্যমে তাদের অর্জিত শিখনফল নির্ণয় করা হবে। পুনর্কিন্যাসকৃত পাঠ্যসূচি অনুযায়ী সপ্তাহ ভিত্তিক শিক্ষার্থী মূল্যায়ন বিবেচনায় নিয়ে অ্যাসাইনমেন্ট বা নির্ধারিত কাজ প্রণয়ন করা হয়েছে। এখানে, এইচএসসি পৌরনীতি ও সুশাসন ২য় পত্র এসাইনমেন্ট উত্তর নিয়ে নিচে আলোচনা করা হলো । পৌরনীতি ও সুশাসন ২য় পত্র এসাইনমেন্ট উত্তরসহ নিচে দেখুন ।
এইচএসসি পৌরনীতি ও সুশাসন ২য় পত্র এসাইনমেন্ট সমাধান
২০২২ সালের এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য ২য় সপ্তাহের এসাইনমেন্ট প্রকাশিত হয়েছে। এসাইনমেন্ট দেওয়া হয়েছে মোট ০৬টি বিষয়ের উপর। বিষয়গুলো হলো
(১) ইংরেজি ১ম পত্র
(২) পদার্থ বিজ্ঞান ২য় পত্র
(৩) পৌরনীতি ও সুশাসন ২য় পত্র
(৪) অর্থনীতি ২য় পত্র
(৫) যুক্তিবিদ্যা ২য় পত্র
(৬) হিসাব বিজ্ঞান ২য় পত্র
নিচে ২য় সপ্তাহের পৌরনীতি ও সুশাসন ২য় পত্র বিষয়ের নির্ধারিত কাজ নিচে যুক্ত করা হল –
পৌরনীতি ও সুশাসন ২য় পত্র এসাইনমেন্ট
HSC Civics 2nd Paper Assignment Answer 2nd week
এইচএসসি এসাইনমেন্ট পৌরনীতি ও সুশাসন ২য় পত্র সমাধান দেখুন এখানে । ২য় সপ্তাহের জন্য যেসকল নির্ধারিত কাজ দেওয়া হয়েছিল একাদশ শ্রেণির জন্য তার সঠিক সমাধান নিয়ে আমরা হাজির হলাম । যাতে করে শিক্ষার্থীরা এই এসাইনমেন্ট উত্তর দিয়ে পরবর্তি শ্রেণিতে উর্ত্তীর্ন হতে পারে । এবং এসাইনমেন্ট সম্পর্কে সটিক ধারনা হতে পারে ,পরবর্তিতে একাই এসাইনমেন্ট উত্তর তৈরী করতে পারেন । নিচে দেখুন এইচএসসি পৌরনীতি ও সুশাসন ২য় পত্র এসাইনমেন্ট সমাধান ২য় সপ্তাহের ।
এইচএসসি পৌরনীতি ও সুশাসন ২য় পত্র এসাইনমেন্ট সমাধান
ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে বঙ্গভঙ্গ এক গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। ১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দের ২৩ ই জুন ভগিরতি নদীর তীরে পলাশীর আম বাগানে বাংলা , বিহার ও উড়িষ্যার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাদ্দৌলার পরাজযের মাধ্যমে এ ভারতীয মহাদেশে ইংরেজদের শাষনের গােড়াপত্তন হয় । তৎকালীন বাংলা , বিহার , উড়িষ্যা , আসাম ও আরাে কিছু অঞ্চল নিয়ে গঠিত হয়েছিল বাংলা প্রেসিডেন্সি ।
এর আয়তন বিশাল হওযাই পুরাে বাংলা প্রেসিডেন্সিকে একসাথে শাষন করা ব্রিটিশদের পক্ষে প্রায় অসম্ভব ছিল ৷ ১৯০৩ সালে লর্ড কার্জন ( যার নামে বর্তমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হল ) এ অঞ্চলের বড় লাট সাহেব হয়ে আসলে তিনি বাংলাকে বিভাজন করার সিদ্ধান্ত নেন । এরই ধারাবাহিকতায় তিনি ১৯০৫ সালের পহেলা সেপ্টেম্বর বঙ্গভঙ্গ করে রাজশাহী , ঢাকা , চট্রগাম ও আসামকে নিয়ে গঠিত করেন পূর্ব বঙ্গ যার রাজধানী হয় ঢাকা ৷ এ সময় লর্ড কার্জন বঙ্গভঙ্গের পক্ষে ঢাকার নওয়াব সলিমুল্লাহ সহ অনেক মুসলিম নেত্রিবৃন্দের সমর্থন লাভ করেন যদিও হিন্দুরা এর ঘাের বিরােধিতা করেছিল ।
বঙ্গভঙ্গের কারণঃ
বঙ্গভঙ্গের মূল যে কারণ তা হল , বাংলা প্রেসিডেন্সির বিশাল আয়তন হওয়ার কারণে ব্রিটিশরা এদেশেকে শাসন – শুষনে বেশি সুবিধা করতে পারছে না । অপরদিকে ১৯৮৫ খ্রিস্টাব্দে জন্ম নেওয়া ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেসের ( আই.এন.সি ) ব্রিটিশ বিরােধী বিভিন্ন কার্যকলাপকে থামিয়ে দিতে বাংলাকে বিভাজন করার প্রয়ােজন মনে করেন । এর পরেও বঙ্গভঙ্গের পেছনে আরাে সুদূর প্রসারি কারণ আছে যা নিচে উল্লেখ করা হল…
(১)প্রশাসনিক কারণ: রাষ্ট্রবিজ্ঞানিগণ মনে করেন বঙ্গভঙ্গের প্রধান কারণ হল প্রশাসনিক কারণ । বাংলা ছিল বিশাল প্রদেশ যার আয়তন ছিল ১ লক্ষ ৮৯ হাজার বর্গমাইল । ফলে শাসনভার ছিল কষ্টসাধ্য । লর্ড কার্জন প্রথম থেকেই একে প্রশাসনিক সংস্কার নামে অভিহিত করেন ।
(২)কংগ্রেসকে দুর্বল করা: ১৮৮৫ সালে ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেস প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ভারতীয় জনগনের সচেতনতা বৃদ্ধি পায় । শুরু থেকেই ব্রিটিস বিরােধীভাবাপন্ন হলেও বঙ্গভঙ্গ যথন প্রস্তাব হয় কংগ্রেস তখন থেকেই এর বিরােধিতা করেন ।
কার্জন বিশ্বাস করতাে কলকাতায় কিছু ষড়যন্ত্রকারী আমার বক্তব্য কংগ্রেসে চালাতাে । কাজেই কলকাতার গুরুত্ব হ্রাস করে বঙ্গভঙ্গ কার্যকর করলে । ষড়যন্ত্রকারীরা সে সুযােগ আর পাবে না । তারা ক্রমেই দুর্বল হয়ে পড়বে ।
(৩)অর্থনৈতিক বৈষম্য দূরীকরণ: ব্রিটিশ সরকারের যতাে উন্নয়ন সব হতাে ভারতের রাজধানী কেন্দ্রীক । তুলনামূলকভাবে পূর্ব বংলার জনগণ অবহেলিত হতাে । যেহেতু এ অঞ্চলের বেশিরভাগ মানুষ মুসলিম তাই মুসলিমরা হিন্দুদের তুলনায় সুযােগ সুবিধা কম পেত । তাই দুই বাংলার মানুষ বিশেষকরে মুসলিমরাও যাতে তাদের প্রয়ােজনীয় সুযােগ – সুবিধা পায় সেজন্যই মূলত বাঙ্গভঙ্গের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
(৪)সরকারি চাকরিতে সমস্যা: সে সময়ের হিন্দুরাই সবচেয়ে বেশি সরকারি চাকরির সুবিধা পেত । এক্ষেত্রে মুসলিমরা ছিল পিছিয়ে । মুসলিমরা যাতে সমানভাবে সরকারি চাকরি করতে পারে এ জন্য বঙ্গভঙ্গের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় । আর বঙ্গভঙ্গের ফলে মুসলিমরাই সবচেয়ে বেশি লাভবান হবে । ঢাকার নওয়াব সলিমুল্লাহ সহ প্রায় সব মুসলিম নেতাগণ বঙ্গভঙ্গের পক্ষে সমর্থন দিয়েছিল ৷
(৫)পাটের ন্যায্য মূল্য প্রাপ্য: পূর্ব বাংলায় পাট উৎপাদন হতাে বেশি কিন্তু পাটকল ছিল না । পাটকল ছিল কলকাতায় ও হুগলিতে । এ জন্য পূর্ববাংলার জনগণ পাটের উপযােক্ত মূল্য পেত না । এ জন্য পূর্ব বাংলার জনগন বঙ্গভঙ্গের পক্ষে ছিল । আর পাটের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতেই বঙ্গভঙ্গ করা হয়েছিল ।
বঙ্গভঙ্গের ফলাফলঃ
বঙ্গভঙ্গ যে লক্ষ্যে করা হয় তার পুরােপুরি বাস্তবায়তি হয় নি বা হতে দেইনি তৎকালীন হিন্দু শ্রেণি বা হিন্দু নেত্রীবর্গ । বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের শুরুতে এর বিরুদ্ধে হিন্দু জাতীয়তাবাদী নেতৃবৃন্দ , বাংলা পত্রপত্রিকা , ভারত ও ইংল্যান্ডের ইংরেজি পত্রিকাগুলাে প্রতিবাদ করে | ঢাকার নবাব সলিমুল্লাহকে ইংরেজরা স্বপক্ষে আনতে সক্ষম হলেও , বাংলার সমগ্র মুসলমান সমাজকে আনতে পারে নাই । ১৯০৫ সালের জুলাই মাসের ভিতরে এই আন্দোলনে স্থানীয় জমিদার এবং সাধারণ প্রজাদের সাথে চরমপন্থী দলগুলােও শরিক হয়ে উঠে ।
১৯০৫ সালের ১৭ ই জুলাই খুলনাতে এই আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ স্বরূপ ব্রিটিশ পণ্য ব্যকটের প্রস্তাব গৃহীত হয় । ক্রমান্বয়ে এই আন্দোলন ব্রিটিশ – বিরােধী জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে রূপ লাভ করে । এই সময় ভারতের অন্যান্য প্রদেশে এর প্রভাব ছড়িয়ে পড়ে । এক্ষেত্রে ব্রিটিশ বিভেদ নীতি দিয়ে মুসলমানদেরকে এই আন্দোলন থেকে সরিয়ে রাখার চেষ্টা করে , ব্রিটিশরা ব্যর্থ হয় ।
ক্রমান্বয়ে এই আন্দোলন তীব্রতর হয়ে উঠলে ব্রিটিশ সরকার কার্লাইল সার্কুলার জারি করে ছাত্রদের সভাসমিতি হরতাল নিষিদ্ধ করা হয় । এর প্রতিবাদে বাংলার যুবসমাজ নভেম্বর মাসে এ্যান্টি – কার্লাইল সার্কুলার সােসাইটি গঠন করে । অবশেষে ১৯১১ খ্রিস্টব্দে বঙ্গভঙ্গ রদ করা হয় ।
মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠার প্রেক্ষাপট ও গুরুত্ব
মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠা :
১৮৮৫ সালে জাতীয় কংগ্রেস প্রতিষ্ঠিত হলেও মুসলমানদের স্বার্থ সংরক্ষণ করা হয় নি । তাই মুসলমানদের অধিকাংশ নেতাই কংগ্রেসে যােগদান থেকে বিরত থেকে বিভিন্ন সভা – সমিতি গঠনে উদ্যোগী ভূমিকা পালন করে । বিভিন্ন সভা – সমিতি মুসলমানদেরকে সচেতন করে এবং ইংরেজি শিক্ষার দিকে মুসলমানদেরকে ঝুঁকতে সাহায্য করে। বঙ্গভঙ্গরদে যখন কংগ্রেস নেতারা সােচ্চার ,
১৯০৬ সালের সেপ্টেম্বরে লাঞ্চিত মুসলমান নেতৃবৃন্দ স্যার আবদুর রহিমের নেতৃত্বে দাবিদাওয়ার খসড়া স্মারকলিপি তৈরি করেন । ৩৫ সদস্যের মুসলিম প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আগা খানের নেতৃত্বে লর্ড মিন্টোর সিমলা ডেপুটেশন হয় । ডেপুটেশনের দাবিদাওয়া লর্ড মিন্টো বিবেচনার আশ্বাস প্রদান করলেও বিশ্ববিদ্যালয় , সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ এবং হাইকোর্টগুলােতে নিয়ােগ ইত্যাদি বিষযে লর্ড মিন্টো নীরব ভূমিকা পালন করেন । এই নীরবতাই একটি স্থায়ী রাজনৈতিক সংগঠনের প্রয়ােজনীয়তাকে অপরিহার্য করে তুলে ।
কয়েক মাস পর ঢাকায় অনুষ্ঠিত শিক্ষ সম্মেলনে একটি রাজনৈতিক দল গঠনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত সিমলা ডেপুটেশন থেকেই গ্রহণ করা হয় । ১৯০৬ সালের ২৭ ডিসেম্বর ঢাকায় শিক্ষা সম্মেলন শুরু হয়ে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত এ অধিবেশন চলে । শিক্ষা সম্মেলনের রাজনৈতিক অধিবেশনে ভিকার – উল মুলকের সভাপতিত্বে অধিবেশনের মূল বক্তা নবাব সলিমুল্লাহ – এর প্রস্তাবে এবং হাকিম আজমল খানের সমর্থনে নিখিল ভারত মুসলিম লীগ গঠিত হয় ।
মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠার গুরুত্ব ও তাৎপর্য
ভারতবর্ষের রাজনৈতিক অঙ্গনের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের সূচনাকারী ঘটনা হলাে ১৯০৬ সালে মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠা । মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠা একদিকে রাজনৈতিক অধিকার আদায়ের প্লাটফর্ম আবার অন্যদিকে রাজনৈতিক , সামাজিক , সাংস্কৃতিক শিক্ষাক্ষেত্রে অধিকার প্রতিষ্ঠার কারক হিসেবে মুসলমানদের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনয়ন করে । নিম্নে মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠার গুরুত্ব ও ভাৎপর্য আলােচনা করা হলাে
১. মুসলমানদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি : কংগ্রেস প্রতিষ্ঠার পর থেকেই মুসলমানদেরকে অবহেলার চোখে বিবেচনা করে নির্যাতন অব্যাহত রাখা হয়েছিল | এভাবে কংগ্রেস নেতৃবৃন্দ ও ব্রিটিশ সরকারই উভয় শ্রেণির মিলিত তৎপরতায় মুসলমান নেতৃবৃন্দকে কংগ্রেসে যােগদান থেকে বিরত রাখে এবং বঙ্গভঙ্গকে মুসলমানদের স্বার্থের অনুকূলে বিবেচনা করে মুসলমানরা পক্ষে অবস্থা নেয় । এভাবেই মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠিত হয় এবং মুসলমানদেরকে তাদের স্বার্থ ও অধিকার । সম্পর্কে সচেতন করে তােলে ।
২. মুসলমানদের আত্মজাগরণ সৃষ্টি : বঙ্গভঙ্গ ঘােষণার পর কংগ্রেস নেতৃবৃন্দ বঙ্গমাতার অঙ্গচ্ছেদ মনে করে এর বিরােধিতা ও রদ করার চেষ্টা চালায় । অপরদিকে মুসলমানরা বঙ্গভঙ্গকে মুসলমানদের স্বার্থের অনুকূলে মনে করে এর পক্ষে অবস্থান নেয় ।
৩.মুসলমানদের সর্বভারতীয় রাজনীতিতে প্রবেশ : মুসলমানদের মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠার পূর্বে কোনাে রাজনৈতিক সংগঠন ছিল না । মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠার পূর্বে মুসলমানরা রাজলৈভিক অসচেতন ও রাজনৈতিক অনীহা থাকলেও মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠা মুসলমানদেরকে রাজনৈতিক সচেতন করে রাজনৈতিক ক্ষেত্রে আগ্রহী করে তােলে ।
৪ , মুসলমানদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট দাবি – দাওয়া উপস্থাপন : মুসলমানদের বিভিন্ন দাবি দাওয়া সম্পর্কে মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠার পূর্বে ব্রিটিশ সরকারকে অবগত করার জন্য স্মারকলিপি ও চিঠিপত্র আবার কখনাে কখনাে কংগ্রেসের পিছনে দৌড়াতে হতো ।
কিন্তু মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠার পর এসবের পরিবর্তে মুসলমানদের দাবি – দাওয়া সরাসরি মুসলিম লীগের মাধ্যমে ব্রিটিশ সরকারের কাছে উপস্থাপন করা সম্ভব হয় । ফলে পূর্বের চেয়ে ব্রিটিশ সরকার মুসলমালদের ব্যাপারে অধিক সচেতন হয়ে ওঠে ।
৫. হিন্দু – মুসলমান বিবাধাকে স্থায়ীরূপ দান : হিন্দু নেতৃবৃন্দ মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠাকে বাঁকা চোখে দেখে পি ও কটাক্ষ করেছে । এই নীতি মুসলমানদেকে মুসলিম লীগের পতাকা তলে আর হিন্দুদেরকে কংগ্রেসের পতাকা তুলে নেওযার মাধ্যমে সমগ্র ভারতে হিন্দু – মুসলমান সাম্প্রদায়িকতাকে উস্কে দিয়েছে । যার ফলে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা প্রবল রূপ নেয় এবং দীর্ঘস্থায়ী হয় ।
৬. পৃথক নির্বাচনের স্বীকৃতি : ১৯০৬ সালের ১ অক্টোবর আগা খানের নেতৃত্বে গভর্নর জেনারেল লর্ড মিন্টোর সাথে সাক্ষাৎ করে পৌরসভা , জেলা বাের্ড এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সিলেট ও সিন্ডিকেট মুসলমানদের জন্য নির্দিষ্ট সংখ্যক আসন সংরক্ক্ষন এবং জনসংখ্যার অনুপাতে নয় বরং রাজনৈতিক গুরুত্বের ভিত্তিতে মুসলমানদের জন্য প্রাদেশিক কাউন্সিল নির্বাচনের দাবি জানানো হয়েছিল ।
এই দাবির ধারাবাহিকতায় ১৯০৯ সালে মলি – মিন্টো সংস্কারের অধীনে ব্রিটিশ সরকার পৃথক নির্বাচনের দাবি মেনে নিয়েছিল । এই দাবি মেনে নেওয়ার পিছলে মুসলীম লীগ প্রতিষ্ঠার গুরুত্ব অনস্বীকার্য ।
৭. দ্বিজাতি তত্ব ও লাহাের প্রস্তাব : হিন্দু – মুসলিম তিক্ততা বৃদ্ধি পেতে থাকে মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এবং বিশ্বাস অবিশ্বাসের পাল্লাটাও ঝুলতে থাকে । মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে মুসলমানরা অধিক রাজনৈতিক সচেতন হয়ে ওঠে এবং স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে মুসলমানদের সমর্থক সংখ্যা বৃদ্ধি পায় । কংগ্রেস ব্রিটিশ সরকারকে বঙ্গভঙ্গ রদ করতে বাধ্য করলেও মুসলিম লীগ এর বিরুদ্ধে প্রবল আন্দোলন গড়ে তােলে।
২০২২ সালের এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের পৌরনীতি ও সুশাসন ২য় পত্র উত্তর
লাহাের প্রস্তাবের বৈশিষ্ট্য ও গুরুত্ব / তাৎপর্যঃ
১৯৪০ সালের ২৩ মার্চ অবিভক্ত পাঞ্জাবের রাজধানী লাহােরে নিখিল ভারত মুসলিমলীগের অধিবেশনে অবিভক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী শেরে বাংলা এ.কে. ফজলুল হক “ লাহাের প্রস্তাব পেশ করেন । বিপুল পরিমাণ উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিযে ২৪ মার্চ প্রস্তাবটি গৃহীত হয় ।
নিচে লাহাের প্রস্তাবের মূল বৈশিষ্ট্যসমূহ দেওয়া হলাে :
০১। ভৌগােলিক দিক থেকে সংলগ্ন এলাকাগুলােকে পৃথক অঞ্চল বলে গণ্য করতে হবে ।
০২। উত্তর – পশ্চিম ও পূর্ব ভারতের সমস্ত অঞ্চলে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের সমন্বয়ে একাধিক স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রগঠন করতে হবে । এবং এ সমস্ত স্বাধীন রাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্য হবে সার্বভৌম ও স্বায়ত্তশাসিত ।
০৩। ভারতের ও নবগঠিত মুসলিম রাষ্ট্রের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সাংস্কৃতিক , শাসনতান্ত্রিক ও অন্যান্য অধিকার ও স্বার্থ সংরক্ষণের কার্যকর ব্যবস্থা করা হবে । অর্থাৎ , সংখ্যালঘুদের স্বার্থরক্ষার সার্বিক ব্যবস্থা সংবিধানে থাকতে হবে ।
০৪। দেশের যেকোনাে ভবিষ্যৎ শাসনতান্ত্রিক পরিকল্পনায় উক্ত বিষয়গুলােকে মৌলিক নীতি হিসেবে গ্রহণ করতে হবে ।
লাহাের প্রস্তাবের গুরুত্ব
১৯৪০ সালের লাহাের প্রস্তাব পূর্ব – পাকিস্তানের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা । এ প্রস্তাবের মাধ্যমে শােষিত , উপেক্ষিত এক বৃহৎ জনগােষ্ঠীর স্বাধীনতার প্রয়ােজনীয়তা স্পষ্টভাবে মানুষের সামনে উঠে আসে ।
মূলত লাহাের প্রস্তাবের পর থেকেই ভারভীয় উপমহাদেশের পট – পরিবর্তন শুরু হয়
ভারতীয় উপমহাদেশে হিন্দুদের সংখ্যাগরিষ্ঠতার কারণে সংখ্যালঘু মুসলমানরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে বৈষম্যের স্বীকার হয় । এ থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য লাহাের প্রস্তাবে “ এক জাতি , এক রাষ্ট্র নীতির দাবি করা হয় ।দবির মূল কথাই হলাে হিন্দুদের জন্য একটি রাষ্ট্র এবং মুসলমানদের জন্য আলাদা একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্টা করতে হবে । এ নীতির প্রেক্ষিতেই মােহম্মদ আলী জিন্নাহ দ্বিজাতি তত্বের ঘােষণা দেন
শুরু হওয়ার পর থেকেই ভারতীয় মুসলমানদের আধিপত্য হ্রাস পেতে থাকে । মুসলমানরা সংখ্যালঘুতে পরিণত হয়ে বাস করা শুরু করে ।তাদের মধ্যে এই উপলদ্ধি হয় যে ভারত স্বাধীনতা অর্জন করলে মুসলমানরা হিন্দুদের তুলনায় পিছিয়ে থাকবে । এই প্রেক্ষিতে লাহাের প্রস্তাব উত্থাপিত হলে মুসলমানদের মধ্যে স্বতন্ত্র জাতিসম্বর উপলব্ধি ঘটে । যা স্বাধীন পাকিস্তান সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ।
এর প্রেক্ষিতে হিন্দু ও মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে ভারত ও পাকিস্তান রাষ্ট্রের সৃষ্টি হ্য । মুসলমান অধ্যুষিত এলাকা নিয়ে ১৪ আগষ্ট পাকিস্তান এবং হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকা নিযে ১৫ আগষ্ট ভারত রাষ্ট্রের সৃষ্টি হ্য । ভারতীয় উপমহাদেশে মুসলিম জাতীয়তাবাদ তীব্র আকার ধারণ করে এবং বিভিন্ন পর্যায় অতিক্রম করে মনবিলে মকসুদের দিকে এগিয়ে যায় । ইংরেজদের বিরুদ্ধে আন্দোলনে এ মুসলিম জাতীয়তাবাদ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
দ্বিজাতিতম্বের বৈশিষ্ট্য ও গুরুত্ব তাৎপর্য
দ্বিজাতিতষ্কের অর্থ হল দুটি জাতির জন্য আলাদা আলাদা তত্ব । অর্থাৎ ভারতে হিন্দু ও মুসলমান যে দুটি আলাদা জাতি , সেই ধারণার রূপায়ণ সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প থেকে দ্বিজাতিতত্ত্বের উদ্ভব উনিশ শতকের প্রথমভাগ থেকেই হিন্দু ও মুসলিম এই দুই সম্প্রদায় সমাজে আলাদা আলাদাভাবে নিজেদের অবস্থানকে দৃঢ় করতে চাইলে এই তত্ত্বের অবতারণা ঘটে ।
এ প্রসঙ্গে জওহরলাল নেহরু বলেছেন । একথা ভুললে চলবে না যে ভারতে সাম্প্রদায়িকতা পরবর্তীকালের বৈশিষ্ট্য – আমাদের চোখের সামনেই তা সৃষ্টি হয়েছে।
জিন্নাহর দ্বিজাতি তত্ত্ব বৈজ্ঞানিক ভিত্তির উপর রচিত ছিল না । তা ছিল প্রধানত , অখন্ড ভারতে অনিবার্য হিন্দু এলিট গােষ্ঠী আধিপত্যের স্থলে ভারত বিভক্তি এবং আলাদা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে এ থেকে স্থায়ী পরিত্রাণের লক্ষ্যে ভিন্ন ভিন্ন স্বার্থ , কৃষ্টি , ভাষা , অঞ্চল ও ঐতিহ্যে বিভক্ত ভারতীয় মুসলমানদেরকে একই পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার একটি ভিত্তি। এমতাবস্থায় জিন্নাহ তাঁর দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে ভারতের বিভক্তি ও পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার দাবি উত্থাপন করলে তা ভারতীয় মুসলমানদের চেতনামূলে অগ্নিস্ফুলিঙ্গ জ্বালিয়ে দেয় । পৃথক আবাসভূমি বা স্বাধীনতার স্বপ্ন তাদেরকে জাগিয়ে তােলে । পাকিস্তান আন্দোলন অপ্রতিরােধ্য হয়ে দাঁড়ায় ।
অবশেষে জিন্নাহর দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে ১৯৪৭ সালে ভারত বিভক্ত হয় । প্রতিষ্ঠালাভ করে দুটি স্বাধীন রাষ্ট্র , ভারত ও পাকিস্তান ।
পরবর্তি বিষয়ের উত্তর জানতে নিচের লিংকে ভিজিট করুন ।
HSC Assignment Answer 2nd week
বিষয় |
এইচএসসি ২য় সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর লিংক |
ইংরেজি ১ম পত্র | উত্তর লিংক |
পৌরনীতি ও সুশাসন ২য় পত্র | উত্তর লিংক |
পদার্থ বিজ্ঞান ২য় পত্র | উত্তর লিংক |
অর্থনীতি ২য় পত্র | উত্তর লিংক |
হিসাব বিজ্ঞান ২য় পত্র | উত্তর লিংক |
যুক্তিবিদ্যা ২য় পত্র | উত্তর লিংক |
এই ৬ টি বিষয়ের উপর ২য় সপ্তাহের এসাইনমেন্ট সাজানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । এই সব বিষয়ের ১০০% সঠিক সমাধান পেতে আমাদের পেজটিতে চোখ রাখুন । প্রতি সপ্তাহের এসাইনমেন্ট উত্তর সবার আগে এখানে পোস্ট করা হয়ে থাকে ।